দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ-গত বুধবার রাতে পার্বতীপুর শহরের চান্দোয়াপাড়া মহল্লায় চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এতে জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে নিহতের বাড়ি থেকে তার স্ত্রী শরিফা বেগমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
জানা গেছে, ২০১৯ খ্রিঃ ৩ অক্টোবর পার্বতীপুর শহরের চান্দোয়াপাড়া মহল্লার মৃতঃ জহির উদ্দীনের ছেলে শাহাজাদ হোসেনের সাথে একই উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের ভোটগাছ গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে শরিফা বেগমের বিয়ে হয়। তবে এটি শরিফার চতুর্থ ও শাহাজাদ হোসেনের তৃতীয় বিয়ে বলে তাদের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। শরীফার বাবার বাড়িতে পূর্বের স্বামীর ৭ বছরের একটি পুত্র সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে কোন বনিবনা ছিল না।
প্রতিদিনই উভয়ের মাঝে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকত। মাত্র দু মাস পূর্বে শাহাজাদ হোসেন টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় “স্বাধীন অটোরাইস মিলে” হেল্পার পদে চাকুরীতে যোগ দেয়।
১৪ এপ্রিল (বুধবার) ভোরে শাহাজাদ কর্মস্থল থেকে চান্দোয়া পাড়ার নিজ বাড়িতে আসে। পুলিশ জানায়,” ওইদিন বিকেলে স্ত্রী শরিফা বেগম সুজির হালুয়ার সাথে ১০টি ঘুমের বড়ি মিশিয়ে তাকে খেতে দেয়। এতে কিছুক্ষনের মধ্যে সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে”। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী শরিফা বেগম দু’হাতে গলাটিপে তাকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক আনিছুর রহমান। হত্যাকান্ডের পিছনে স্ত্রীর পরকিয়া সম্পর্কই মূল কারণ বলে তিনি জানান।
পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) সোহেল রানা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,
“প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা সে স্বীকার করেছে”। সে আরও জানায়, ইউটিউব এর মাধ্যমে সাতক্ষীরার ছেলে মালেশিয়া প্রবাসি মামুনের সাথে তার পরিচয় হয়। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়, মামুন দেশে ফিরে এলেই বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হবেন তারা। কিন্তু তাদের মিলনে বড় বাঁধা ছিল তার বর্তমান স্বামী শাহাদাত। এদিকে তার মালয়েশিয়ান প্রেমিক জানত সে অবিবাহিত। তাই বর্তমান স্বামীকে পথের কাঁটা ভেবে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয় এই ঘাতক স্ত্রী। এই ঘটনায় তার বিরদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দাঁয়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর ১৮।
ময়না তদন্তের জন্য লাশ বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।